নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট
ভারতে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রাথমিক উৎসবে ভাটা পড়েছে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন প্রয়োগের কারণে। তাদের মূল সংগঠন থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, নতুন আইনের অধীনে এখনই এ সম্প্রদায়ের লোকজনকে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন না করতে। মতুয়াদের মূল সংগঠনের নাম অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ (এআইএমএম)। তারা এ সম্প্রদায়ের সদস্যদের অনুরোধ করেছে যে- সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচনে কেন্দ্রে নতুন সরকার গঠন হওয়ার পরই যেন তারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন।
বার্তা সংস্থা পিটিআই জানায়, মতুয়ারা হলেন সাবেক পূর্ব পাকিস্তানি (বর্তমান বাংলাদেশ)। দেশভাগ ও বাংলাদেশ সৃষ্টির পর ধর্মীয় নিষ্পেষণের করণে তারা ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তারাই সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি দুর্বল অংশ।
গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) সক্রিয় করে। ফলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর বা তার আগে যেসব অমুসলিম- হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পারসি এবং খ্রিস্টান ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের নাগরিকত্ব দিতে ব্যবহার করা হবে এই আইন।
অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের জেনারেল সেক্রেটারি মহীতোষ বৈদ্য বলেন, তার সম্প্রদায়ের সব সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাদের বলা হয়েছে, নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত তারা যেন নাগরিকত্বের জন্য আবেদন না করেন।
নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার জন্য সিএএ আইনের অধীনে একটি পোর্টাল চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। মহীতোষ বৈদ্য বলেন, এই আইনের কাঠামো তৈরির পর মতুয়া সম্প্রদায়ের বেশ কিছু সদস্য অনলাইনে তা পূরণ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ফর্মের ৫ নম্বর কলাম পূরণ করতে গিয়ে তারা সমস্যার মুখে পড়েছেন। কারণ, সেখানে বাংলাদেশে তাদের বসবাসের প্রমাণসহ ঠিকানা দিতে বলা হচ্ছে।
কারণ, তাদের বেশিরভাগই কোনো কাগজপত্র ছাড়া ভারতে এসেছেন অথবা ভারতে গিয়ে কিছু ডকুমেন্ট হাতে পেলেও তা ফেলে দিয়েছেন। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড পাওয়ার পর পুরনো ডকুমেন্টগুলো নষ্ট করে ফেলেছেন তারা। কারণ, একজন ব্যক্তির পক্ষে দুটি দেশের ডকুমেন্ট ধারণ করা বিপজ্জনক। যদি তারা এ অবস্থায় ধরা পড়েন তাহলে তাদের ফরেনার্স অ্যাক্টের অধীনে আটক করে বিচার করা হবে।
ভারতে মতুয়াদের সবচেয়ে বড় সংগঠন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ বর্তমানে দুটি ধারায় বিভক্ত। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিজেপির একজন এমপি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। অন্য অংশের নেতৃত্বে আছেন রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের এমপি মমতা বালা ঠাকুর।
মতুয়া অধ্যুষিত হরিণঘাটা আসনে বিজেপির বিধানসভার এমপি অসীম সরকার। তিনি বলেছেন, কেন্দ্রে তৃতীয় মেয়াদে বিজেপি ক্ষমতায় না আসা এবং সিএএ আইন সহজ না করা পর্যন্ত সম্প্রদায়ের লোকজনকে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, মতুয়ারা যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন সে সম্পর্কে আমরা সরকার ও দলের নেতৃস্থানীয় পর্যায়কে অবহিত করেছি। কারণ, যে পোর্টাল চালু করা হয়েছে সেখানে বাংলাদেশ থেকে আগতদের ডকুমেন্ট নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এজন্য সম্প্রদায়ের লোকজনকে পীড়িত না হতে অনুরোধ করেছি এবং অপেক্ষা করতে বলেছি সরকার গঠন হওয়া পর্যন্ত।
Posted ৮:৩৭ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin